ম্যারিলিন এড্যামসন এর লেখা
জীবনে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। কোন যানবাহন চালানোর জন্য অনুমতিপত্র পাবার জন্য আপনাকে একটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। কোন নির্দিষ্ট চাকরি পাবার জন্য আপনাকে অবশ্যই সেই যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হবে।
যদি ‘‘এ’’ এর থেকে ‘‘বি’’ বড় হয়। আপনার যোগ্যতা প্রমাণ করুন। আপনি যে উপযুক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি তা প্রমাণ করুন। আপনি যে ‘‘গ্রহণযোগ্য’’ তা প্রমাণ করুন।
কীভাবে আপনি জানতে পারবেন যে ঈশ্বর আপনাকে সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ করেছেন?
আপনি অন্য যেসব বিষয়ের সম্মুখীন হয়েছেন সেগুলোর মত ঈশ্বরের সাথে আপনার সম্পর্ক শূন্যস্থান দিয়ে পূরণ করার মত বিষয় দিয়ে শুরু হয় না, ‘‘আমাকে গ্রহণ কর কারণ...’’
ঈশ্বরের এই কথা দ্বারা এটা শুরু হয় যে, ‘‘আমি তোমাকে গ্রহণ করি।’’ ‘‘আমি তোমাকে স্বাগত জানাই।’’
আমি পুরুষ সমকামীই হোন, বা মহিলা সমকামী হোন, উভকামী, অথবা নপুংশক(হিজরা) ই হোন বা আপনার যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে থাকুক না কেন, ঈশ্বর আপনার শত্রু নয়। যদি আপনি এর মধ্যে একটি হয়ে থাকেন, ঈশ্বর আপনার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে চান। তিনি এই সম্পর্ক যে কারও সাথে এবং সকলের সাথেই তৈরী করতে চান।
শাস্ত্রে, আপনি দেখতে পাবেন শুধুমাত্র একটি দলই যীশুর উপর রাগান্বিত ছিল.. ধর্মীয় স্ব-ধার্মিকেরা।
যীশু পতিতা এবং অপরাধীসহ সকলের সাথেই অবাধে মিশেছেন। উঁচু শ্রেণীর ধর্মীয় গুরুরা এই বিষয়ে বিরক্ত হয়ে যীশুকে কষ্ট দিয়েছিলেন। তিনি তাদেরকে বিচারমূলক, অহংকারী, প্রেমহীন এবং ভণ্ড হিসেবে দেখতেন।
আপনি হয়ত এই শব্দগুলো দেখে থাকবেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে সেসব ধার্মিক লোকদের কথা চিন্তা করবেন যারা আপনার প্রতি খারাপ আঘাতমূলক, অভদ্র অথবা বিচারমূলক আচরণ করেছেন। এগুলো কি যীশুর হৃদয়ের বহি:প্রকাশ ঘটায়? না। যীশু বলেছেন প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসতে। এর মধ্যে আঘাতমূলক মন্তব্য কিভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়? আমার কাছ থেকে শেখো, কারণ আমার স্বভাব নরম ও নম্র।’’১
এই পৃথিবীতে যীশুর অনন্য জীবন-যাপন আপনাকে এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে পারে যে... কীভাবে আরও বিশদভাবে জীবনের অভিজ্ঞতা লাভ করা যায়। তিনি এই সকল অস্তিত্বের সৃষ্টিকর্তা হয়েও মানুষ হিসেবে আসলেন, যাতে করে আমরা তাঁকে জানতে পারি, ঈশ্বরকে জানতে পারি।
যীশুর একজন বন্ধু তিনি হলেন যোহন, তাঁর সম্বন্ধে তিনি এই বলেছেন,‘‘আমরা সকলে তাঁর সেই পূর্ণতা থেকে দয়ার উপরে আরও দয়া পেয়েছি।মোশির মধ্য দিয়ে আইন-কানুন দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে দয়া ও সত্য এসেছে।’’২
‘‘অনুগ্রহ’’ শব্দটি আমরা প্রায়শই ব্যবহার করে থাকি। এর মানে হচ্ছে কোন কিছু করা ছাড়াই আমাদের প্রতি ঈশ্বরের দয়া। যীশু আমাদেরকে অনুগ্রহ এবং সত্য দিতে চান, যাতে আমরা এই বিভ্রান্তির জীবনে সঠিক নির্দেশনা পাই।
আমি এই ভেবে বিষ্মিত হতাম যে যদি আমরা ঈশ্বরের কাছে গ্রহণযোগ্য হই তাহলে কেমন হতো। হয়ত আপনি আমার মতই বিষ্মিত হবেন। সেই বিষয়টি এখানে দেওয়া হল:
‘‘ঈশ্বর মানুষকে এত ভালবাসলেন যে, তাঁর একমাত্র পুত্রকে তিনি দান করলেন, যেন যে কেউ সেই পুত্রের উপরে বিশ্বাস করে সে বিনষ্ট না হয় কিন্তু অনন্ত জীবন পায়।ঈশ্বর মানুষকে দোষী প্রমাণ করবার জন্য তাঁর পুত্রকে জগতে পাঠান নি, বরং মানুষ যেন পুত্রের দ্বারা পাপ থেকে উদ্ধার পায় সেইজন্য তিনি তাঁকে পাঠিয়েছেন।যে সেই পুত্রের উপরে বিশ্বাস করে তার কোন বিচার হয় না, কিন্তু যে বিশ্বাস করে না তাকে দোষী বলে আগেই স্থির করা হয়ে গেছে, কারণ সে ঈশ্বরের একমাত্র পুত্রের উপরে বিশ্বাস করে নি।’’৩
আপনি কি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন? ‘‘যে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে সেই অনন্ত জীবন পায়’’। যে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে সেই অনন্ত জীবন পায়। যে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে সে তাঁর মধ্য দিয়ে রক্ষা পায়। যে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে সে কখনও নিন্দিত হয় না।
তিনি চান যেন আমরা তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করি।
যীশুর সম্বন্ধে যোহন বলেছেন,‘‘ তিনি নিজের দেশে আসলেন, কিন্তু তাঁর নিজের লোকেরাই তাঁকে গ্রহণ করল না।তবে যতজন তাঁর উপর বিশ্বাস করে তাঁকে গ্রহণ করল তাদের প্রত্যেককে তিনি ঈশ্বরের সন্তান হবার অধিকার দিলেন...’’৪
তিনি শুধুমাত্র একজন ভাববাদী বা শিক্ষক বা ধর্মীয় গুরু ছিলেন না। যীশু বলেছেন তাঁকে জানা মানেই ঈশ্বরকে জানা। তাঁকে বিশ্বাস করা মানেই ঈশ্বরকে বিশ্বাস করা। এটাই তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যুকে নির্দেশ করে। তারা তাঁকে ঈশ্বর নিন্দুক বলে দোষারোপ করেছিল। সেই লোকেরা বলত যে যীশু ছিলেন ‘‘ঈশ্বরকে নিজের পিতা বলে ডেকে নিজেকে ঈশ্বরের সমানও করছিলেন…৫
তিনি প্রমাণ দিতে চেয়েছেন। একজন মানুষ যা পারে না যীশু তা করে দেখিয়েছেন, তাৎক্ষণিকভাবে অন্ধদের সুস্থ করা, পঙ্গুদের সুস্থ করা, রোগীদেরকে সুস্থ করেছেন।
তবুও যীশুর এর উপরেও অনেক কিছু করেছেন। তিনি বহু বার বলেছেন যে তাঁকে আটক করা হবে, মারা হবে, এবং ক্রুশে দেওয়া হবে... আর তিন দিন পর তিনি মৃত্যু থেকে জীবিত হবেন। এটা বেশ শক্ত প্রমাণ। এর পরে কোন পুনর্জন্ম হবে না, লুকায়িত কোন কিছু নয়, রহস্যময় কিছু নয় বা এই জাতীয় কিছু নয় ‘‘তুমি আমাকে তোমার স্বপ্নে দেখবে’’। না। কবরস্থ হবার তিন দিন পরে তিনি মৃত্যু থেকে জীবিত হয়েছেন।
রোমীয়রা এই বিষয়ে জানত আর তাই তারা একদল সৈন্য দ্বারা যীশুর কবর পাহাড়া দেবার ব্যবস্থা করল।
যাইহোক, নির্যাতস এবং ক্রুশে মৃত্যুবরণ করার পর তিন দিন পরে যীশু শারীরিকভাবে কবর থেকে উঠলেন। তাঁর মৃতদেহ সেখানে ছিল না, আর শুধুমাত্র তার কবরের কাপড়গুলো সেখানে পড়ে ছিল। যীশু পরবর্তী ৪০ দিন অগণিতবার লোকদেরকে স্বশরীরে দেখা দিয়েছেন। এটাই খ্রীষ্টিয় বিশ্বাসের সৃষ্টি করেছে। তিনি নিজেকে যা দাবি করতেন তিনি তা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন.. ঈশ্বর মাংসে মূর্তিমান, এবং তিনি পিতা ঈশ্বরের সমান।
এই বিষয়ে যীশু স্পষ্ট ছিলেন যে: ‘‘পিতা কারও বিচার করেন না, কিন্তু সমস্ত বিচারের ভার পুত্রকে দিয়েছেন,যেন পিতাকে যেমন সবাই সম্মান করে তেমনি পুত্রকেও সম্মান করে। পুত্রকে যে সম্মান করে না, যিনি তাঁকে পাঠিয়েছেন সেই পিতাকেও সে সম্মান করে না। “আমি আপনাদের সত্যিই বলছি, আমার কথা যে শোনে এবং আমাকে যিনি পাঠিয়েছেন তাঁকে বিশ্বাস করে তার অনন্ত জীবন আছে। তাকে দোষী বলে স্থির করা হবে না; সে তো মৃত্যু থেকে জীবনে পার হয়ে গেছে।৬
সকলেরই ভালবাসা পাবার আকাঙ্খা আছে। মানব প্রেম গুরুত্বপূর্ণ। তবুও যে ব্যক্তি আপনাকে ভালবাসে, সে আপনাকে অসম্পূর্ণভাবে ভালবাসে, কারণ মানুষ নিজেই অসম্পূর্ণ।
কিন্তু ঈশ্বর আপনাকে সম্পূর্ণভাবে ভালবাসতে পারেন। তিনি আমাদেরকে ভালবাসেন কারণ তাঁর স্বভাব ভালবাসাপূর্ণ, এবং এটা কখনই পরিবর্তিত হয় না, কখনও শেষ হয় না।
আমরা সবাই ঝামেলা সৃষ্টি করি। আমরা আমাদের নিজেদের মান সম্মত জীবনযাপন করতে পারি না, আর ঈশ্বরের মান সম্মত জীবনযাপন করা তো অনেক দূরের কথা। কিন্তু ঈশ্বর আমাদের যোগ্যতা দেখে আমাদের গ্রহণ করেন না। তিনি আমাদেরকে তখনই গ্রহণ করেন যখন আমরা তাঁকে বিশ্বাস করি, তাঁর কাছে আসি, তাঁকে আমাদের জীবনে ঈশ্বর হিসেবে আসতে বলি।
যীশু তাঁর সাথে সম্পর্কের বিষয়টি এভাবে বর্ণনা দিয়েছেন:
‘‘পিতা যেমন আমাকে ভালবেসেছেন আমিও তেমনি তোমাদের ভালবেসেছি। আমার ভালবাসার মধ্যে থাক।আমি আমার পিতার সমস্ত আদেশ পালন করে যেমন তাঁর ভালবাসার মধ্যে রয়েছি, তেমনি তোমরাও যদি আমার আদেশ পালন কর তবে তোমরাও আমার ভালবাসার মধ্যে থাকবে। এই সব কথা আমি তোমাদের বললাম যেন আমার আনন্দ তোমাদের অন্তরে থাকে ও তোমাদের আনন্দ পূর্ণ হয়।আমার আদেশ এই, আমি যেমন তোমাদের ভালবেসেছি তেমনি তোমরাও একে অন্যকে ভালবেসো।’’৭
আপনার জীবনের যে কোন অর্থপূর্ণ সম্পর্কই আপনার উপর ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তাই না? এই বিষয়টি সবার জন্যই সত্য। সম্পর্ক যত গভীর হয়, এর প্রভাব ততটা বেশি থাকে।
সুতরাং, এর মানে এই যে ঈশ্বরকে জানার মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কে সৃষ্টি হয়। তিনি তাঁর ভালবাসা এবং আপনার জন্য তাঁর পরিকল্পনা অনুসারে চলার জন্য আপনাকে পরিচালিত করবেন। আপনি তখন সিদ্ধান্ত নেবেন। আপনার স্বাধীন ইচ্ছাও থাকবে। তিনি আপনার জীবনের দখল নেবেন না, তাঁর ইচ্ছা আপনার ওপর জোর করে চাপাবেন না। তবুও, আমি নিজেকে তাঁর জ্ঞানে গভীরভাবে মুগ্ধ অনুভব করেছি, তাঁর অনুগ্রহ, এবং ঈশ্বর মানুষের ওপর কেমন দৃষ্টিভঙ্গি রাখেন তা খুঁজে পেয়েছি।।
ঈশ্বর সমাজের নিয়মের সাথে তাঁর নির্দেশাবলীর মিশ্রণ ঘটান না। ঈশ্বর, যিনি এই মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা, তাঁর কখনও সমাজের পরিচালনার দরকার হয় না, হয় কি? আমি এটা পছন্দ করি। আমি এটাকেই স্বাধীন বলে মনে করি।
যখন আমি ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক শুরু করি, তখন তিনি আমার জীবনে যা করেছেন তা নিচে উল্লেখ করা হল:
আমি একজন নাস্তিক ছিলাম। আমার জীবনের একটি বড় পরিবর্তন ছিল ঈশ্বরে বিশ্বাস করা, তাঁর সম্বন্ধে জানার জন্য বাইবেল পড়া। এটি আসলে স্মৃতিচারণমূলক ছিল।
যীশুকে আমার জীবনে আসার জন্য অনুরোধ করার কয়েকমাস পর আমার বন্ধু আমাকে জিজ্ঞেস করে যে,‘‘তুমি কি তোমার জীবনের পরিবর্তনগুলো খেয়াল করেছ?’’ আর আমি এই বললাম,‘‘তুমি কি বলতে চাচ্ছ?’’ সে আমাকে বলল,‘‘ইদানীং আমি তোমার সাথে আমি অনেক কিছু শেয়ার করেছি আর তুমি এগুলো নিয়ে কোন মজা করনি। তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমি আমার কথা শুনছ।’’
আমি কিছুটা বিরক্ত হলাম। আমি বলতে চাচ্ছি যে, আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু আমার সাথে কথা বলছে আর আমি তাঁর সাথে ভদ্র মানুষের মত ব্যবহার করছিলাম আর তার কথা শুনছিলাম!
(সে আমার জীবনের পরিবর্তনগুলো দেখে এতটাই বিষ্মিত হয়েছিল, যে সেও যীশুকে তার জীবনে আসার জন্য অনুরোধ করার সিদ্ধান্ত নিল।)
যখন আমি ঈশ্বরের সাথে আমার সম্পর্ক শুরু করেছিলাম, তখন আমার প্রতি তাঁর ভালবাসা বুঝতে পারলাম। এটা আমাকে অবাক করেছিল। বাইবেলে পড়া লেখাগুলো আমার কাছে ঈশ্বরের ভালবাসার বার্তার মত মনে হত। (আমি এই ভেবে বড় হয়েছি যে আমরা পরিমাপ করিনি বলে ঈশ্বর আমাদের উপর বেশ রেগে আছেন।) তাই ঈশ্বর যে আমাদের ভালবাসেন এই বিষয়টি আমার কাছে বেশ অবাক লেগেছে।
আর আমি মনে করি ঈশ্বরের সান্নিধ্য পাবার পর আমার ভালবাসার আবেগিক চাহিদা এতটাই গভীর পর্যায়ে গিয়েছিল যে আমি নিজেকে একজন আবেগিতভাবে সচেতন ব্যক্তির চাইতেও বেশি কিছু হয়ে উঠেছিলাম। আমি নিজের থেকে অন্য মানুষদেরকে আরও বেশি করে চিন্তা এবং তাদের যত্ন করা শুরু করেছিলাম। আর স্পষ্টতই আমি একজন ভাল শ্রোতা এবং যত্নশীল ব্যক্তি হয়ে উঠি। আমি বেড়ে ওঠার সময় যে জাতিগত গোঁড়ামি ছিলো তা কমে যেতে লাগল।
যখন আমরা তাঁকে আমাদেরকে পরিচালনা এবং শিক্ষা দিতে দেই, যীশু আমাদেরকে এই প্রতিজ্ঞা করে বলেন যে ,‘‘ আপনারা সত্যকে জানতে পারবেন,আর সেই সত্যই আপনাদের মুক্ত করবে।’’৮
আপনি যদি যীশুর সাথে সম্পর্ক তৈরী করেন তাহল আপনি আপনার আচরণ, অথবা আশাহীনতা, বা অন্যের সম্পর্কে দৃষ্টিকোণ, বা আপনি কীভাবে আপনার সময় অতিবাহিত করছেন সেগুলোতে পরিবর্তন দেখতে পাবেন। শুধুমাত্র ঈশ্বরই জানেন। কিন্তু যখন আপনি তাঁকে জানতে থাকবেন, তিনি আপনার জীবনে ইতিবাচত প্রভাব ফেলবেন। যীশুকে অনুসরণ করে এমন ব্যক্তিদেরকে জিজ্ঞাসা করে দেখুন, আর তারা আপনাকে এটাই বলবে যে তাঁকে জানার মাধ্যমে তাদের জীবনে কতটা প্রভাব বিস্তার করেছে।
তিনি আমাদেরকে তাঁর মহৎ পথ বেছে নেওয়ার জন্য মনে আকাঙ্ক্ষা দেন। তিনি কীভাবে এই অপ্রত্যাশিত কাজটি করেন। এটা কি এর মত না যে, তিনি আপনাকে নির্দিষ্ট কয়েকটি আদেশ দিয়ে দিলেন যেটা আপনাকে মেনে চলতেই হবে। এটা আত্ন-চেষ্টা নয় বা আপনি এটা ঈশ্বরকে দেখানোর জন্য করছেন। আর এটা ধর্মীয় কোন লক্ষ্যেও নয়। এটা হল একটি সম্পর্ক, ঈশ্বরের সাথে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। ঈশ্বর নিজেই ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে পরিচালনা দান এবং তাঁর সম্বন্ধে, এবং জীবন সম্পর্কে শেখাচ্ছেন। আমরা যখন তাঁকে আমাদের জীবনে আসার অনুরোধ করি তখন তিনি আমাদের জীবনে আসেন। তিনি আমাদের জীবন, ভেতর ও বাইরে থকে, হৃদয়ের গভীর থেকে প্রভাব বিস্তার করেন।
যীশু আপনাকে জীবনের আরও অনেক কিছু দিতে চান। আপনি জানেন যে কীভাবে সম্পর্ক, চাকরি, খেলাধুলা, বিনোদন... এসব কিছু্রই দারুণ কিছু মুহূর্ত রয়েছে, কিন্তু এগুলোর সবকিছুই ক্ষণস্থায়ী। এগুলোর সন্তুষ্টতা আমাদেরকে পূর্ণতা দেয় না। আর এই পৃথিবীর কোন কিছুই তা দিতে পারবে না।
আমাদের নির্ভরযোগ্য কোন কিছুর ওপর স্থায়ী আকাঙ্খা থাকে। যীশু বলেছেন,‘‘ যীশু তাদের বললেন, “আমিই সেই জীবন-রুটি। যে আমার কাছে আসে তার কখনও খিদে পাবে না। যে আমার উপর বিশ্বাস করে তার আর কখনও পিপাসাও পাবে না।আমি তো আপনাদের বলেছি যে, আপনারা আমাকে দেখেছেন কিন্তু তবুও বিশ্বাস করেন না।পিতা আমাকে যাদের দেন তারা সবাই আমার কাছে আসবে। যে আমার কাছে আসে আমি তাকে কোনমতেই বাইরে ফেলে দেব না।’’৯ আমি জীবনের এমন একটি দর্শনের খোঁজ করেছি যা যে কোন পরিস্থিতিতেই কাজ করবে। যখন আমি ঈশ্বরকে জানলাম তখন আমার এই খোঁজের অবসান হল। আমি তাঁকে বিশ্বাসযোগ্য হিসেবে খুঁজে পেলাম।
তাঁর সাথে আপনার সম্পর্ক অন্যদের তাঁর সাথে সম্পর্কের থেকে আলাদা দেখাবে। আপনি আপনার আলাদা অভিজ্ঞতা, স্বকীয়তা, স্বপ্ন, চাহিদা এসব নিয়ে আলাদা একজন ব্যক্তি। সুসমাচারগুলো পড়ুন আর আপনি দেখবেন যে যীশু আলাদা আলাদা ব্যক্তিদের জন্য আলাদা আলাদা বিষয় বলেছেন।
ঈশ্বরের সাথে সম্পর্কের মানে এই নয় যে আপনি জীবনের কঠিন বাস্তবতাগুলোর সম্মুখীন হবেন না। আপনি হয়ত আর্থিক সংকট, গুরুতর অসুস্থতা, দুর্ঘটনা, ভূমিকম্প, সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়া ইত্যাদির মত বিষয়গুলোর মধ্য দিয়ে যেতে পারেন।
জীবনে যে দু:খ-কষ্ট আছে সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। আপনি এগুলোর মধ্য দিয়ে একাই যেতে পারেন। অথবা আপনি এগুলোর মধ্যেও ঈশ্বরের ভালবাসা, তাঁর উপস্থিতি এবং ঘনিষ্ঠতা পাওয়ার সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন।
আরও একটি সতর্কবার্তা এখানে দেওয়া হল। তিনি হয়ত আপনাকে অন্যদের যত্ন নেবার জন্য ব্যক্তিগত ত্যাগের মত কঠিন চ্যালেঞ্জ এর মধ্য দিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।
যীশুর অনেক অনুসারীরা (আর বর্তমানের অনেক অনুসারীরা) প্রচন্ড ত্যাগের মধ্য দিয়ে পার করেছেন। উদাহরণস্বরূপ. পৌলকে বার বার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, রড এবং বেত দিয়ে মারা হয়েছিল অগণিতবার। একবার তাকে বিক্ষিপ্ত জনতা প্রায় মেরেই ফেলেছিল। তিনি বেশ কয়েকবার জাহাজে বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়েছেন, না খেয়ে অনেক দিন থেকেছেন, এবং প্রায়ই তাকে জীবন বাঁচানোর জন্য পালিয়ে যেতে হয়েছে।
স্পষ্টভাবেই বোঝা যাচ্ছে, যীশুর অনুসারীরা সহজ জীবন-যাপন করেন নি। তবুও পৌল, এবং অন্যান্য বিশ্বাসীরা ঈশ্বরের ভালবাসায় স্থির থেকেছেন।
পৌল লিখেছেন,‘‘ কিন্তু যিনি তোমাদের ভালবাসেন তাঁর মধ্য দিয়ে এই সবের মধ্যেও আমরা সম্পূর্ণভাবে জয়লাভ করছি।আমি এই কথা ভাল করেই জানি, মৃত্যু বা জীবন, স্বর্গদূত বা শয়তানের দূত, বর্তমান বা ভবিষ্যতের কোন কিছু কিম্বা অন্য কোন রকম শক্তি,অথবা আকাশের উপরের বা পৃথিবীর নীচের কোন কিছু, এমন কি, সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে কোন ব্যাপারই ঈশ্বরের ভালবাসা থেকে আমাদের দূরে সরিয়ে দিতে পারবে না। ঈশ্বরের এই ভালবাসা আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশুর মধ্যে রয়েছে।’’১০
আপনি আপনার পথের জন্য পরিকল্পনা করেন না। যদি আপনি সমকামী পুরুষ, সমকামী মহিলা, উভকামী, হিজড়া হন, অথবা আপনি আপনার যৌনতা নিয়ে সংশয়ে আছেন... যদি এখানে আপনি যীশুকে আসতে দেন, তাহলে যীশু আপনার জীবন পরিচালনা করবে। আর এটা এতটাই মহৎ হবে যে আপনি তা কল্পনাও করতে পারবেন না। যীশু বলেছেন, ‘‘আমিই জগতের আলো। যে আমার পথে চলে সে কখনও অন্ধকারে পা ফেলবে না, বরং জীবনের আলো পাবে।’’১১
আপনি আপনার জীবনে যাই করে থাকেন না কেন, যীশুর আপনাকে সম্পর্ণভাবে ক্ষমা করতে চান। আমাদের পাপকে উপেক্ষা করা হয় নি। এর জন্য মূল্য দেওয়া হয়েছে, যীশুর আমাদের বদলে নিজে ত্যাগমূলক ক্রুশীয় মৃত্যুবরণ করেছেন।
আপনি কি ঈশ্বরকে জানতে ইচ্ছুক? যদি আপনি আপনার জীবনে এখনও আসার জন্য অনুরোধ না করে থাকেন, তাহলে আমি আপনাকে তাঁকে আপনার জীবনে আসতে দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করছি। তিনি বলেছেন এটাই সেই সম্পর্ক যা আমাদেরকে পরিতৃপ্ত করে। আমরা কখনও তাঁকে ছাড়া কখনও এই জীবন-যাপন করার কথা ছিল না।
আপনি আমার ইচ্ছামত শব্দ ব্যবহার করে তাঁর সাথে কথা বলতে পারেন। আপনার যদি সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তাহলে আপনি এটা বলতে পারেন:
‘‘যীশু, আমি তোমাকে বিশ্বাস করি। আমার জন্য মৃত্যুবরণ করা এবং তোমার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করার সুযোগ দেবার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। আমি তোমাকে আমার জীবনের ঈশ্বর হতে দিতে চাই, আমি তোমাকে জানতে চাই, আর আমি তোমার ভালবাসার অভিজ্ঞতা এখনই পেতে চাই, আমি তোমাকে আমার জীবন পরিচালনা করার জন্য অনুরোধ করছি।’’
পাদটীকাসমূহ: (১) মথি ১১:২৮-২৯ (২)যোহন ১:১৬,১৭ (৩) যোহন ৩:১৬-১৮ (৪) যোহন ১:১১,১২ (৫) যোহন ৫:১৮ (৬) যোহন ১৫:৯-১২ (৭) যোহন ১৫:৯-১২ (৮) যোহন ৬:৩৫,৩৭ (১০) রোমীয় ৮:৩৭-৩৯ (১১) যোহন ৮:১২