মেরিলিয়ান এডামসন এর লেখা
ধর্মীয় লোকেরা আমার এই প্রশ্নের জন্য অসন্তুষ্ট হতেন যে, “কিভাবে আপনি জানেন যে ঈশ্বর আছেন?”
হয়তো তারা আমার মনোভাব দেখে বিষ্মিত হতেন। অথবা হতে পারে তাদের এর উত্তর সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। তাদের বেশিরভাগ উত্তরই ছিল, “ভাল, আপনি জানেন”।
আমি বেশি একটা জটিল হওয়ার চেষ্টা করতাম না। কিন্তু নিশ্চিত যে আমি “জানি না”। এবং আমি প্রত্যাশা করছিলাম যে কেউ হয়তো জানবে!
এর অনেক মাস পর, আমি ভাবলাম, “অনেক লোকই আছে যারা বলেন যে তারা ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেন কিন্তু তারা জানেন না যে কেন!” এটা ঠিক যেন সান্তাকোসের সত্য জানার মত ঘটনা। এতে স্পষ্ট মনে হয় যে ঈশ্বর আসলে সম্পূর্ণরুপে মিথ্যা বিষয়। হয়তো কোন কোন ব্যক্তির ঈশ্বরকে বিশ্বাস করা প্রয়োজন কিন্তু স্পষ্টভাবে কোন প্রমাণ তাদের নেই। কোন দৃশ্যত প্রমাণ নেই। আমি শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তে আসলাম ...ঈশ্বর বলতে আসলে কেউ নেই।
আমি অনেক বছর এই বিশ্বাস ধরে রেখেছি এবং কখনো প্রত্যাশাই করি নাই যে তা পরিবর্তন হবে। কিন্তু তারপর এমন একজন লোকের সাথে আমার সাক্ষাত হল যিনি আমার মধ্যে ঈশ্বরের অস্তিত্বের সম্ভাবনা সম্পর্কে আগ্রহ সৃষ্টি করলেন। তিনি ছিলেন খুবই যত্নবান, দয়ালূ এবং খুবই বুদ্ধিমতি। এটি আমাকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছিল যে তার মত এমন একজন বুদ্ধিমতি নারী ঈশ্বরকে বিশ্বাস করতে পারেন।
তিনি ঈশ্বর সম্পর্কে এমনভাবে কথা বলতেন যে মনে হত ঈশ্বর তার খুব কাছের বা ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে তিনি তাঁকে গভীরভাবে ভালবাসতেন। আমি তার জীবন সম্পর্কে ভাল করে জানতাম। তিনি যেকোন বিষয় ঈশ্বরের কাছে নিয়ে আসতেন, তাঁকে বিশ্বাস করতেন যে কোন না কোন ভাবে ঈশ্বর তাকে উত্তর দিবেন বা তার প্রতি যত্নশীল হবেন। তিনি আমাকে বেশ স্পষ্টভাবেই বলতেন যে, তিনি শুধু প্রার্থনা করতেন আর ঈশ্বর তার বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতেন। এক বছরের উপর আমি প্রতিনিয়ত দেখেছি যে কিভাবে তিনি তার প্রার্থনার উত্তর পেতেন। আমি বিভিন্ন দিক পরিস্থিতিতে তার জীবন লক্ষ্য করেছি, এবং ঈশ্বরের উপর তার অগাধ বিশ্বাস লক্ষ্য করেছি।
তাই, একদিক থেকে আমি ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস করতে চেয়েছিলাম কারণ আমি তার জীবন ও অন্যদের জন্য তার যে ভালবাসা তার প্রশংসা করি। কিন্তু আমি আমার বুদ্ধি ও আমার যাচাই করার ক্ষমতার বাইরে গিয়ে কিছু কিছু বিষয় বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই। একটি ভাল ধারণা, কিন্তু সেটাই সব ছিল। কোন কিছুকে সত্য ভাবা বিষয়টিকে সত্য তৈরী করে না।
সেই সময়ে দর্শন বিদ্যার উপর আমি আমার ব্যক্তিত্বকে গঠন করার চেষ্টা করছিলাম।
আমি এমন কিছু চেষ্টা করছিলাম যা বেশিরভাগ লোক করতে চায় না। প্রতি কয়েক সপ্তাহ পর, আমি কোন একজন দার্শনিকের জীবন অধ্যয়ন করার চেষ্টা করতাম যেমন... নীটশে, হুমি, ডোসটোয়িভস্কাই, সারত্রি, প্লাটো, ইত্যাদি, এবং তারপর সেই বিষয়টি আমি আমার জীবনে প্রয়োগ করার চেষ্টা করতাম। আমি আমার জীবনের জন্য একটি নিখুঁত, কার্যকর দর্শনবিদ্যার খোঁজ করছিলাম। আমি অনেক খুঁজেছি, হয় তাদের দর্শনবিদ্যায় কোন অপূর্ণতা আছে, অথবা প্রয়োগ করার জন্য অবাস্তব বা অকার্যকর বলে মনে হত। কিন্তু আমি খোঁজ চালিয়ে যেতে লাগলাম।
ঈশ্বর সম্পর্কে আমার মাথায় যত প্রশ্ন আসছিল সেই গুলো দিয়ে আমি আমার বন্ধুকে চ্যালেঞ্জ করছিলাম। আমি প্রত্যেক সন্ধ্যায় আমার প্রশ্নগুলো লিখে রাখতাম। এভাবে প্রায় একবছরের বেশি চলে গেল। একদিন তিনি আমার কাছে একটি ব1 দিলেন যেখানে সংক্ষিপ্ত ভাবে এই প্রশ্নের উত্তরগুলো লেখা ছিল, যেমন, ঈশ্বর বলে কি কেউ আছেন; যীশু কি ঈশ্বর; বাইবেল কি। এখানে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছিল। এখানে এমন কোন বিষয় লেখা ছিল না যে, “তোমাকে বিশ্বাস করতেই হবে।”
আমি ঈশ্বর সম্পর্কিত কিছু প্রমাণ সেখানে পেলাম যা খুবই যুক্তিযুক্ত ছিল। যে দুটি বিষয় আমার কাছে বেশি বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়েছে তা হলো পানির রাসায়নিক পদার্থের বৈশিষ্ট্য এবং সূর্য থেকে পৃথিবীর দুরত্ব। এর সবগুলো নিখুঁতভাবে সাজানো ছিল, খুবই নিখুঁতভাবে একজায়গায় রাখা হয়েছে। আমার যে বিশ্বাস ছিল যে “এর পিছনে কিছুই নেই” তা ঈশ্বরের অস্তিত্বের সম্ভাবনার কাছে দূর্বল হয়ে পড়ল। ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই এই বিষয়ের থেকে ঈশ্বর হয়তো আছেন এই বিষয়ের দিকে আমার বিশ্বাস বাড়তে লাগল।
এরপর আমি আরেকটি বিষয়ের সম্মুখীন হলাম যা আমার বর্তমান জীবনদর্শনকে পরিপূর্ণরুপে পরিবর্তন করে দিল। এসময় আমার বিশ্বাসকে প্রমাণ করতে যা কিছু আমার কাছে ছিল তা অপর্যাপ্ত মনে হতে লাগল। এটা দেখে আমি আশ্চর্য হলাম যে জীবনের প্রতি আমার পূর্ণ নির্ভরতা ছিল তা আমি হারিয়ে ফেলতে লাগলাম। যাইহোক, পরিস্থিতি নিজেই ঠিক হতে লাগলো এবং আমি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। আমার একটি সুস্থির /শক্ত ব্যক্তিত্ব রয়েছে। আমার সমস্ত জীবনে, আমি কখনই “প্রয়োজন/অভাব” অনুভব করি নাই। আমার কোন সমস্যা ছিল না। কোন বড় বাধা বা সমস্যা ছিল না। এবং কোন বিষয়েই আমার কোন অনুতাপ ছিল না বা নিজেকে দোষী মনে হয় নাই।
কিন্তু ঈশ্বর সম্পর্কিত বিষয়টি এমন ছিল যে আমি আমার মন থেকে কোন ভাবেই সরাতে পারছিলাম না... তিনি কি সত্যিই আছেন? তাঁর কি অস্তিত্ব আছে? হয়তো ঈশ্বর বলে কেউ আছেন.....
একরাতে আমি আরেকবার আমার বন্ধুর সাথে কথা বলছিলাম, এবং সে জানতো যে তথ্য আমার প্রয়োজন তার সবই আমার কাছে আছে। তিনি জানতেন যে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার মত প্রশ্ন আর আমার নেই। তবুও আমি তর্ক করার চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। আমাদের কথার কোন এক মুহূর্তে আমার বন্ধু আমার দিকে ফিরে আমাকে স্পষ্ট করে বলল, “তুমি জান, আমি তোমার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিতে পারি না, এবং ঈশ্বরও চিরকাল তোমার জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকবেন না।”
আমি সেই সময় জানতাম যে তিনি যা বলছেন তা ঠিক। আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের সাথে খেলা করছিলাম। তাই আমি বাড়িতে চলে গেলাম এবং সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমি তাঁর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি। হয় আমি ঈশ্বরকে বলব যেন তিনি আমার জীবনে আসেন নতুবা আমি বিষয়টি চিরদিনের জন্য শেষ করে দিতে যাচ্ছি এবং আর কোনদিন আমি ঈশ্বরের অস্তিত্বের সম্ভাবনার বিষয়ে ভাবব না। আমি এই সিদ্ধান্তগুলো সাথে যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। এই বিষয়ে আমি আর চিন্তা করতে পারছিলাম না।
তাই, পরবর্তী তিন চার ঘন্টা আমি সেই বিষয়গুলো পুনরাবৃত্তি করতে লাগলাম যা আমি পড়েছিলাম এবং খেয়াল করেছিলাম। আমি সবকিছু মূল্যায়ন করলাম।
আমি উপসংহারে এই কথা বলতে পারি যে ঈশ্বরের অস্তিত্বের যে প্রমান তা এত বেশি শক্তিশালী ছিল যে এটি ঈশ্বর নাই তার থেকেও ঈশ্বরকে বিশ্বাস করতে আরো বেশি সাহায্য করেছিল। এরপরে আমাকে এই উপসংহারের উপর কাজ করতে হয়েছিল।
আমি জানতাম যে শুধুমাত্র বুদ্ধিমত্তার সাথে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করা ছিল খুব সাধারন বিষয়। এটা হচ্ছে সিদ্ধান্ত নেয়ার মত...এরোপ্লেনের অস্তিত্ব। আমি এরোপ্লেনে বিশ্বাস করি এর কোন অর্থ নেই। যাইহোক, যদি আপনাকে কোন স্থানে যেতে হয় এবং এরোপ্লেন যদি হয় সেখান যাওয়ার পথ, তাহলে আপনি কাজ করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং প্লেনের মধ্যে উঠতে হবে।
আমাকে আসলে ঈশ্বরের সাথে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। আমি ঈশ্বরকে আমার হৃদয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলাম।
কয়েক ঘন্টা এভাবে চিন্তা করার পর আমি ঈশ্বরকে বললাম, “ঠিক আছে ঈশ্বর, তুমি জিতে গেছ। আমি চাই যেন তুমি আমার অন্তরে আস এবং আমার জীবন দিয়ে তোমার যা ইচ্ছা তাই করতে পার।” (এটা আমার কাছে যুক্তিসঙ্গত মনে হয়েছিল যে যেহেতু ঈশ্বরের অস্তিত্ব আছে তাই যদি তিনি চান তাহলে আমার জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে প্রভাবিত করা ও পরিচালনা করার অধিকার তাঁর আছে।)
আমি বিছানায় গেলাম এবং পরেরদিন সকালে আমি ভাবলাম যদি ঈশ্বর এখনও এখানে থাকতেন। এবং সত্যি বলছি, আমি তাঁর উপস্থিতি “অনুভব” করেছি। একটি বিষয় আমি নিশ্চিত করে জানতাম। আমার তাৎক্ষনিকভাবে এই ঈশ্বরকে জানার দারুন ইচ্ছা তৈরী হয়েছিল যাকে আমি এখন বিশ্বাস করছি।
আমি বাইবেল পড়তে চেয়েছিলাম। যখন আমি পড়তে শুরু করলাম, আমার মনে হল যে ঈশ্বর আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন যে তিনি কে এবং আমার সাথে এই সম্পর্ককে তিনি কিভাবে দেখেন। এটি দারুন বিষয় ছিল। যে বিষয়টি আমাকে বিষ্মিত করেছে তা হল বাইবেলে প্রায়ই তিনি ভালবাসার কথা বলেছেন। আমি এটা প্রত্যাশা করি নাই। আমার চিন্তা ছিল যে আমি শুধু তাঁর অস্তিত্বকে স্বীকার করব। তাঁর কাছে আমার কোন প্রত্যাশা ছিল না, কিন্তু যখনই আমি বাইবেল পড়লাম, বুঝতে পারলাম যে তিনি তাঁর ভালবাসায় আমার সাথে যোগাযোগ করতে চান। এটা আমার কাছে আশ্চর্য লেগেছিল।
এখনও আমার মৌলিক যে সন্দেহপ্রবন বৈশিষ্ট্য তা রয়ে গেছে। প্রথম কয়েক মাস বা বছর, আমি নিজেকে নিজে জিজ্ঞাসা করতাম, “আমি কি সত্যিই ঈশ্বরকে বিশ্বাস করছি? এবং কেন আমি?” কেন আমি ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেছি তার পাঁচটি কারণ আমি পর্যায়ক্রমে পূনরালোচনা করতাম। সুতরাং ঈশ্বরের উপর আমার বিশ্বাস কোন অনুভ‚তি উপর ভিত্তি করে নয় কিন্তু বিষয়বস্তু ও বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে।
আমার কাছে এটি একটি বিল্ডিং-এর ভিত্তিস্তরের মত। বিষয়/কারণগুলো আমার বিশ্বাসকে সমর্থন করে। এটি এমন যে কেউ যেন গাড়িতে করে সোনার গেট ব্রিজ পার হচ্ছে। তারা ব্রিজের যে কোন কিছু অনুভব করতে পারে। কিন্তু ব্রিজের নির্মাণ কাজ/নকশা/উপকরণ তাদেরকে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নিরাপদে যেতে সাহায্য করে। ঠিক একইভাবে, ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করার জন্য বাস্তবিক প্রমান—জ্ঞানভিত্তিক, ঐতিহাসিক, বৈজ্ঞানিক কারণগুলো আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক লোক আছে যাদের এগুলোর কিছুই প্রয়োজন নেই। কিন্তু আমি বোকা হওয়া ঘৃনা করি, এবং আমার একটু ইচ্ছুক চিন্তাভাবনা করার ইচছা আছে। ঈশ্বরের অস্তিত্বের বাস্তবিক ও নিখুঁত প্রমাণ আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত অনেক বছর ধরে আমি একজন খ্রীষ্টিয়ান হিসাবে জীবন যাপন করছি---কেন এখন আমি ঈশ্বরকে বিশ্বাস করি? কি এমন কারন আছে যার জন্য আমি ধারাবাহিকভাবে ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে যাব?
আমি জানিনা যে এগুলোর মধ্যে একটিও আপনার কাছে বিশ্বাসযোগ্য হবে কিনা। কিন্তু আমি এই উদ্বেগগুলো একপাশে রেখে আপনার সাথে সৎ থাকার চেষ্টা করব। পূর্বে আমার প্রশ্ন ছিল ঈশ্বরের অস্তিত্বের বিষয়ে। ঈশ্বরের সাথে একটি সম্পর্ক শুরু করার পর, ঈশ্বর যে বাস্তব সেই বিষয়ে আমি আরো কিছু অতিরিক্ত প্রমাণ দেখতে পেলাম। যেমন...
1. যখন কোন বিষয়ে আমার প্রশ্ন থাকে বা ভাবনা থাকে অথবা সেই বিষয়ে গভীর ধারনার প্রয়োজন হয় তখন ঈশ্বর বাইবেলের মধ্যে দিয়ে আমার সাথে কথা বলেন। যা তিনি আমাকে দেখান তা আমার প্রত্যাশিত উত্তরের চেয়েও বেশি সন্তুষ্টিজনক থাকে এবং আমার প্রশ্নের উত্তরের সাথে তা মিলে যায়। এখানে একটি উদাহরণ দেয়া হল।
একদিন, আমার রুটিন, কাজের শেষ সময়সীমা, এবং দ্বায়িত্বগুলো আমাকে এমনভাবে চেপে ধরেছিল যে মনেহচ্ছিল তা আমার ঘাড় শক্ত করে বেধে রেখেছে। আপনি হয়তো জানেন যে যখন আপনি অতিরিক্ত হতাশার মধ্যে থাকেন তখন আপনি জানেন না যে প্রথমে কি করতে হবে?
তাই আমি একটি কাগজ ও কলম নিলাম, এবং ঈশ্বরকে জিজ্ঞাসা করলাম: “আমাকে শুধু বল যে তুমি আমাকে দিয়ে কি করতে চাও, এবং আমি তা করব।” আমি ১০০% দায়িত্ব গ্রহন করতে সম্পূর্ণরুপ প্রস্তুত ছিলাম, এবং মূলত ঈশ্বরকে প্রাধান্য স্থাপন করতে অনুরোধ করছিলাম যেন তিনি আমাকে বলে দেন যে কিভাবে তা করতে হবে এবং আমি তা করবো।
তারপর আমি আমার বাইবেল খুললাম এবং সেই স্থানটি পড়তে লাগলাম যেখানে যীশু একজন অন্ধ ব্যক্তির সাথে কথা বলছিলেন। যীশু তাকে জিজ্ঞাসা করছিলেন, “তুমি কি চাও আমি তোমার জন্য কি করব?”
আমি আবার পড়লাম। যীশু জিজ্ঞাসা করলেন: “তুমি কি চাও আমি তোমার জন্য কি করব?” বিষ্মিত হওয়ার পরিবর্তে আমি আমার কলম তুলে নিলাম এবং ঈশ্বরের কাছে সম্পূর্ণ একটি ভিন্ন তালিকা লিখতে শুরু করলাম। এখানে আমি ঈশ্বরের বৈশিষ্ট্য খুঁজে পেলাম। এটা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে তিনি সেখানে আছেন। তিনি যত্ন নেন এবং তিনি করতে সক্ষম।
আমি ঐ উদাহরনটি পছন্দ করেছি কারণ এটি কিছুটা সংক্ষিপ্ত। কিন্তু আমি আরো শতশত উদাহরণ উল্লেখ করতে পারি যেখানে আমি ঈশ্বরকে প্রশ্ন করছিলাম আর তিনি নিখুঁতভাবে, সম্পূর্ণরুপে উত্তর দিয়েছেন। এটি সম্ভবত ঈশ্বরের একটি বৈশিষ্ট্য যা আমি খুবই মূল্য দেই এবং তারিফ করি – সেটি হল তিনি আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে ইচ্ছুক।
এটি এমন কিছু নয় যা আমি অন্য খ্রীষ্টিয়ানদের কাছ থেকে শিখেছি। এটি হচ্ছে ঈশ্বরের সাথে আমার সম্পর্কের ব্যাপার। আমি তাঁকে এমন মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন করি যে আমি সত্যিই চাই যেন তিনি আমার কাছে যা চান তা আমাকে বলেন...যেন আমার চিন্তাগুলো ঠিক থাকে, আমার জীবনের যে সমস্ত জায়গাগুলো ঠিক নেই সেগুলো ঠিক করেন, যেন আমাকে দেখিয়ে দেন যে কোথায় আমি তাঁকে বিশ্বাস করছি না, এমন আরো অনেক কিছু। এবং তিনি সবসময়ই আনন্দের সাথে আমাকে উত্তর দেন।
2. একইভাবে, যখন কোন সিদ্ধান্তের জন্য আমার পরিচালনা বা নির্দেশনার দরকার হয়, তিনি তা করেন। আমি বিশ্বাস করি যে ঈশ্বর আমাদের সিদ্ধান্তগুলোকে মর্যাদা দেন বা সম্মান করেন। আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের জীবনের জন্য তাঁর একটি পরিকল্পনা আছে, সেই জন্য তিনি আমার বিবাহ সম্পর্কে চিন্তা করেন, আমার কি ধরনের চাকরি রয়েছে তা তিনি ভাবেন, এবং এর চেয়েও আরো ছোট ছোট সিদ্ধান্ত নিয়েও তিনি চিন্তা করেন। আমি ব্শ্বিাস করি না যে আমি কোন টুথপেষ্ট কিনবো তা নিয়ে তিনি চিন্তা করেন বা এমন সাধারণ সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি ভাবেন। কিন্তু যে সিদ্ধান্ত আমার জীবনে প্রভাব ফেলবে বা যা তিনি আমার জীবনে পূর্ণ করতে চান, সেই ধরনের সিদ্ধান্তের জন্য তিনি চিন্তা করেন বা যত্ন নেন।
কখন ঈশ্বর আমাকে পরিস্কার নির্দেশনা দিয়েছেন?
কোন এক সময় মধ্যপ্রাচ্যের একটি ভ্রমনের জন্য আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। সেখানে অনেক ঝুঁকি ছিল, এবং আমি সেখানে যেতে ইচ্ছুক ছিলাম শুধুমাত্র যদি ঈশ্বর সেখানে আমাকে যেতে বলেন। এটা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে আমি জানতাম যে তিনি কি করতে চান।
দুইবার আমি ঈশ্বরকে একটি চাকরির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। উভয় সময়ই তাঁর পরিচালনা ছিল এত পরিস্কার যে যে কেউ এর সারাংশ বুঝতে পারবে। আমি একটি উদাহরণ এখানে খন্ডাকারে তুলে ধরছি।
আমার কলেজের শেষের দিকে, গ্রাজুয়েশন শেষে একটি খ্রীষ্টিয়ান সংস্থায় আমার চাকুরী করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল যার জন্য আমাকে ক্যালিফোরনিয়াতে যাওয়ার দরকার ছিল।
তখন ছিল বড়দিনের ছুটি এবং আমি তখন আমার বাবা-মাকে দেখতে যাচ্ছিলাম। একদিন সন্ধ্যায়, আমি একা ছিলাম আর বন্ধুদের একটা লম্বা তালিকা নিয়ে চিন্তা করছিলাম। আমি চিন্তা করছিলাম যে কাকে বলব যেন সে ক্যালিফোরনিয়াতে আমার রুমমেট হিসাবে থাকে। আমার মাথায় একজনের নাম আসল যার নাম খ্রীষ্টি, যে ইতিমধ্যেই পাশ করে গেছে এবং একটি চাকরি নিয়ে আওয়াতে বাস করছে। আমি চিন্তা করছিলাম যে সে হয়তো আমার জন্য ঠিক রুমমেট হবে, কিন্তু আমি অনেক মাস যাবৎ তার সাথে কোন কথা বলি নাই। ঠিক ত্রিশ মিনিট পর আমার বাবার বাড়ীতে যে ফোন আছে সেখানে খ্রীষ্টি কল করল।
তার প্রথম কথাই ছিল এরকম যে, “আমি শুনলাম যে তুমি নাকি এই খ্রীষ্টিয়ান সংস্থায় কাজ নিয়েছো।” আমি অবাক হয়ে গেলাম কারণ আমি এই কথা শুধুমাত্র ওহিওর একজন বন্ধুকেই বলেছিলাম।
তার পরের কথা ছিল, “ঠিক আছে, আমার সবধরনের থালা বাসন, এবং হাড়ি-পাতিল যা লাগবে সব আছে।” আমি বললাম, “কি!?” সেও ক্যালিফোনিয়ার সেই শহরে যাচ্ছিল এবং আমাকে কল করছিল এটি জানার জন্য যে আমি তার সাথে একরুমে থাকতে রাজি কিনা।
ওকে, নিশ্চয় আপনি আমার পয়েন্টটি বুঝতে পেরেছেন।
আপনি হয়তো এই কথা বলবেন যে, এতে আশ্চর্য হবার কি আছে, এমনকি এখানে সিদ্ধান্তের জন্য ঈশ্বরের কি সাহায্য দরকার? আমি জানতাম যে আমার বাবা-মা এই কাজের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করবে। আমি চিন্তা করেছিলাম হয়তো এর জন্য আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে সম্পর্ককে সারা জীবনের জন্য মূল্য দিতে হবে। তাই এটা কোন সাধারণ সিদ্ধান্ত ছিল না। আমি ঈশ্বরকে জিজ্ঞাসা করলাম যেন তিনি যা চান সেই বিষয়ে আমাকে পরিচালনা করেন। এবং তিনি তাই করলেন। এই কাজের সাথে আরো প্রায় দশটি বিষয় বা ঘটনা জড়িত ছিল যা বিষয়টি পরিস্কার করে তুলেছিল।
আরেকটি কারণ হলো আমি এখনও ঈশ্বরকে বিশ্বাস করি...
3. জীবন সম্পর্কে ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে—কেন আমরা এখানে, কি উদ্দেশ্য আছে, জীবনের কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কোনটি মূল্যবান অথবা কষ্টকর—অন্য যেসমস্ত কিছু আমি পড়েছি তার থেকে ঈশ্বরের কাছে উত্তম উত্তর রয়েছে। আমি অনেক ধর্ম ও যুক্তিবিদ্যা ও অন্যান্য মনিষীদের জীবনী পড়েছি। কিন্তু যা আমি বাইবেল থেকে পড়েছি, যা আমি ঈশ্বরের দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেছি সেটাই আমার ধাঁধাঁর অংশগুলোকে মিলাতে সাহায্য করেছে, অন্য কিছু নয়।
এখনও অনেক কিছু আছে যা আমি বাইবেল থেকে পড়বো এবং এই কথা বলে বাইবেল বন্ধ করব যে, “আমি বুঝতে পারি নাই।” সুতরাং আমি এটা বলতে চাই না যে আমি বাইবেল সম্পূর্ণভাবে বুঝে গেছি। তারপরিবর্তে, আমি এটা বলতে চাই যে বাইবেল থেকে আমরা শুধু সেটাই গ্রহণ করি যা ঈশ্বর আমাদের জন্য প্রকাশ করতে চান। এটা ঠিক পৃথিবীতে আমাদের জীবনের পরিচালনা পুস্তক পড়ার মত যা শুধুমাত্র আমাদেরকে পড়ার জন্যই দেয়া হয় নাই। আবিস্কারক আমাদের কাছে ব্যাখ্যা করছেন যে এগুলো কিভাবে কাজ করে এবং পরবর্তীতে প্রত্যেকদিন ব্যক্তিগত ভাবে তা জীবনে ব্যবহার করার কথা বলছে।
4. মানুষের সাথে ঘনিষ্ঠতার চেয়ে ঈশ্বরের সাথে ঘনিষ্ঠতা আরো বেশি। আমি এটি আমার বিবাহ, দুই সন্তান ও অনেক ঘনিষ্ট বন্ধুদেরকে বলেছি। তাঁর ভালবাসা নিখুঁত। তিনি অবিশ্বাস্বরুপে দয়াশীল। আমি এখন যেখানে আছি তিনিই আমাকে এনেছেন, এবং যেভাবে আমি বলেছি যে তিনি আমার সাথে কথা বলেন। তিনি এমনভাবে আমার কাজে মধ্যবর্তী যে আমি শুধু অবাক হয়ে লক্ষ করছি। তিনি কোন বিশ্বাসসুত্র বা মতবাদ নয়। আমি তাঁকে আমার জীবনে কাজ করতে দেখেছি।
5. আমি আমার নিজের জন্য যা করেছি তার থেকে তিনি আমার জীবনের জন্য বেশি করেছেন। এটা নিজের সম্পর্কে কোন হীনমন্যতা বা আত্ব-বিশ্বাসের অভাব সম্পর্কিত বিবৃতি নয়। আমি এমন সব কৃতিত্ত্বের কথা বলছি যা আমার মনে কখনও ছিল না। আমি আমার নিজের জন্য যা কামনা করতে পারতাম তার থেকে বেশি বুদ্ধি, পরিচালনা, সমাধান, জ্ঞান ও উচ্চতর মনোভাব তিনি আমাকে দিয়েছেন।
আরো অনেক রয়েছে, কিন্তু আমার মনে হয় এটি আপনার জন্য যথেষ্ট হয়েছে। আমি জানি না যে এগুলোর একটাও আপনার কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে কিনা, কিন্তু আমি যতটা পেরেছি এই বিষয়ে সৎ থেকেছি।
যদি আপনি আরো কিছু প্রমাণ দেখতে চান যা আমাকে নাস্তিক থেকে ঈশ্বরের একজন বিশ্বাসী করে তুলেছে, তাহলে দয়া করে নিচের প্রবন্ধ দুটি দেখুন:
ঈশ্বর কি আছেন?
অন্ধ বিশ্বাসের বাইরে
ঈশ্বরকে জানার মূল্য যখন আমি চিন্তা করি তখন এগুলো খুঁজে পাই: যেন আমরা জীবনকে বুঝতে পারি, আমরা যেন স্পষ্টভাবে এগিয়ে যেতে পারি, আমরা সমস্যা বা বিপদগুলো এড়িয়ে যেতে পারি, আমরা ঈশ্বরের দ্বারা পরিচালিত হতে পারি, সত্য জানতে পারি, শক্তি/আশা/শান্তি পেতে পারি, এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে উপভোগ করতে পারি, এবং ঈশ্বরকে উপভোগ করতে পারি যিনি আমাদের প্রতি সর্বদা বিশ্বস্ত থাকবেন এবং ভালবাসবেন। ঈশ্বর, যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন এই সবকিছুই তিনি সরবরাহ করেন। এই কার্যকরী এবং নিশ্চিত জীবনের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই তাঁর সাথে যুক্ত থাকতে হবে, তাঁর উপর নির্ভর করতে হবে। যতক্ষণ না আমরা তাঁকে জানতে পারছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা খুঁজতেই থাকবো, সবসময় ভিন্ন ভিন্ন সম্ভাবনাকে পরীক্ষা করে দেখবো এবং তাদের ক্ষুতগুলো খুঁজে পেতে থাকবো। কিন্তু যখন আমরা ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক রেখে তাঁর প্রতি সাড়াপ্রদান করি, তখন আমরা পরিতৃপ্ত হই, পূর্ণ হই। আমরা এখন একটি পরিকল্পিত জীবন যাপন করার জন্য এবং যিনি আমাদেরকে সেই পরিকল্পনায় পরিচালনা দিতে পারেন তাঁর সাথে জীবন কাটানোর জন্য প্রস্তুত আছি।
► | কিভাবে ঈশ্বরের সাথে একটা সম্পর্ক শুরু করেন |
► | আমার একটি প্রশ্ন বা মন্তব্য আছে… |
পাদটিকা: (1) Paul E. Little, Know Why You Believe, IVP Books