প্রশ্ন: ‘‘কেন এমন একজন ঈশ্বরের আরাধনা করবেন যিনি ভয়াবহ বিষয়গুলো যেমন একজন শিশু যখন ধর্ষিত হয় তা কেন হতে দেন?’’
আমাদের উত্তর: একজন শিশু ধর্ষিত হওয়ার মত গর্হিত কাজ মনে হয় না আর আছে। এর সম্মুখীন হওয়া ব্যক্তির জন্য বিভিন্নভাবে বিধ্বংসীমূলক। এর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার সময় রাগ করাাটা স্বাভাবিক। এই ধরণের কর্মকান্ডের জন্য আসলে কোন ব্যাখ্যা নেই।
যাইহোক, এতে ঈশ্বরের কোন দোষ নেই যে তাঁর সৃষ্টিকৃত মানুষের খারাপ কাজের জন্য তিনিই দোষারোপিত হবেন। বাবারা তাদের মেয়েদের শ্লীলতাহানি করবেন এবং মায়েরা তাদের ছেলেদের মৌখিকভাবে গালাগালী করবেন এতে ঈশ্বরের কোন দোষ নেই।
মানুষের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা আছে।
এই বিষয়ে আমাদের কেমন বোধ করা উচিত যে যেসব লোকেরা আমাদের ক্ষতি করে তাদেরকে ঈশ্বর কেন বাধা দেন না?
এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের কেমন দৃষ্টিভঙ্গি রাখা উচিত যে কেন ঈশ্বর আমাদেরকে অন্যের ক্ষতি করা সময়ে বাধা দেন না?
আমরা হয়ত এটা চাইতে পারি যে মানুষের খারাপ কাজের সীমাবদ্ধতা ঈশ্বর নিজেই তৈরী করে দিয়েছেন, সে সীমা পার করলে ঈশ্বর মানুষকে শাস্তি দেন। আমরা হয়ত এটাও বলতে পারি যে যে কোন ব্যক্তি কোন শিশুর শ্লীলতাহানি করে তাকে ঈশ্বর মেরে ফেলতে পারেন।
ঠিক আছে, তাহলে শিশু পর্ন প্রযোজকেরা যখন এই লোকটিকে শিশুদের শ্লীলতাহানিতে উৎসাহ দেয় সেটার কী হবে? ঈশ্বর যদি তাদেরকেও মেরে ফেলেন তাহলে কি সেটা ন্যায়সঙ্গত হবে?
ঠিক আছে, যেসকল মানুষেরা গালাগালী করে তাদেরকে ঈশ্বর কি করবেন? মুখের কথা দ্বারা মানুষকে গভীরভাবে আঘাত করা যায়। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে আমরা আমাদের স্বাধীন ইচ্ছা অনুযায়ী আমাদের কাজগুলো করে থাকি। আর ঈশ্বর যে আমাদের এটা করতে দিচ্ছেন এতে আমরা ঈশ্বরের উপর রাগান্বিত হতে পারি না।
ঈশ্বর কি আমাদের কাছে এটা প্রকাশ করেন নি যে কীভাবে আমরা সঠিকভাবে জীবন-যাপন করব?
এটা কি সত্য নয় যে, যদি সবাই ১০ আজ্ঞা পালন করে চলে, তাহলে কোন শিশুকেই ধর্ষিত হতে হতো না বা শ্লীলতাহানি হতো না?
এটা কি সত্য নয় যে, যদি সকলেই ১০ আজ্ঞা মেনে চলে, তাহলে কেউ চুরি করবে না, কোন স্ত্রী প্রতারিত হবে না, কোন ছেলে বা মেয়ে খুন হবে না?
ঈশ্বর আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার পরিবর্তে আমাদের স্বাধীনতা দেন। কারও সিদ্ধান্তের উপর ঈশ্বর হস্তক্ষেপ করেন না। এর পরিবর্তে তিনি আমাদের সকলকে এটা নিশ্চিত করেন যে, প্রত্যেকেরই নিজের কৃতকর্মের জন্য ঈশ্বরের কাছে জাবাবদিহি করতে হবে এবং সেখানে ন্যায়বিচার হবে। আমাদেরকে যেমনভাবে পরিচালনা দেওয়া হয়েছে সেই অনুযায়ী ন্যায়বিচার করা হবে।
এখানে সমস্যাটি হল, আমাদেরকে যেভাবে সঠিক জীবনযাপনের জন্য বলা হয়েছে সেটা যথেষ্ট নয়। ঈশ্বর নিজেই সেটা বলেছেন।
ঈশ্বর বলেছেন আমাদের আরও গভীর কিছু প্রয়োজন।
আপনার জীবনের এমন কোন ব্যক্তির কথা চিন্তা করুন যিনি আপনার জীবনে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা দান করেছেন। একজন শিক্ষক বা কোন বন্ধু বা আত্নীয় যে কেউই হতে পারে। এমন কেউ যাকে আপনি সত্যিই শ্রদ্ধা করেন। আপনি তাদের জীবন-যাপন পছন্দ করেন। তারা যেভাবে লোকদের সাথে ব্যবহার করে। আপনি তাদের মত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন।
তারা আপনার হৃদয় এবং চিন্তা উভয়কেই প্রভাবিত করে।
প্রায় একইভাবে, ঈশ্বর আমাদেরকে শুধুমাত্র একটি সম্পর্কই দিতে চান না, বরং আমাদের নিজের সাথে সম্পর্ক তৈরী করাতে চান।
ঈশ্বরের সাথে সম্পর্কে মাধ্যমে আমরা বাহ্যিক নিয়ম-কানুন পালন যেটা ভাল এবং মন্দ বিবেচনা করতে সাহায্য করে সেটার থেকেও আরও গভীরে নিয়ে যায়।
যীশু আমাদের বলেন,‘‘ তোমরা যারা ক্লান্ত ও বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছ, তোমরা সবাই আমার কাছে এস; আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব।’’১
তিনি বলেন যে যারা ধার্মিক তাদেরকে তিনি পরিতৃপ্তি দান করবেন। যারা ‘‘জীবনের জন্য আরও ক্ষুধার্ত’’ তারা এটা খুঁজে পাবে। এর এমন এক প্রভাব রয়েছে যেটা নিয়ম দ্বারা কখনও পাওয়া সম্ভব নয়। শুধু ‘‘ভাল হওয়ার চেষ্টা করার’’ চাইতে আমাদের আরও বেশি কিছু হতে হবে।
যীশুকে আমাদের অন্তরে গ্রহণ করার জন্য তিনি আমাদের এভাবে আমন্ত্রণ জানান যে, ‘‘দেখ, আমি দরজার কাছে দাঁড়িয়ে ঘা দিচ্ছি। কেউ যদি আমার গলার আওয়াজ শুনে দরজা খুলে দেয় তবে আমি ভিতরে তার কাছে যাব...’’২
যদি আপনি অন্য কোন ব্যক্তির দ্বারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন, এবং চরমভাবে সংগ্রাম করছেন, তাহলে ঈশ্বর আপনার হৃদয় এবং মনকে সুস্থতা দান করতে পারেন, যেটা অন্য কেউই পারে না।
এটা একটা কঠিন সিদ্ধান্তের মত হতে পারে... ঈশ্বর এটা না ঘটার জন্য বাধা দেন নি, কিন্তু তিনিই আপনাকে সাহায্য করতে পারেন এবং সুস্থতা দান করত পারেন। স্পষ্টতই, অন্য ব্যক্তি ঈশ্বরের পথের বিপরীতে থাকবে। আপনি ঈশ্বরের ভালবাসায় নিজেকে সুস্থ করার পথে যেতে পারেন।
যীশু নির্যাতন সম্পর্কে জানেন। তিনি আমাদের জন্য ক্রুশে তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন।
আমরা যাতে ক্ষমা পাই সেজন্যই তিনি এমন করলেন। আপনি আপনার জীবনে যা কিছু করেছেন সেগুলোর সাথে আরেকজন আপনার সাথে যা করেছে সেটার সাথে তুলনাযোগ্য নয়। তুবও আমাদের প্রত্যেকেই বিভিন্ন উপায়ে পাপ করেছি।
যীশুকে ৪০ বারেরও বেশি বার আঘাত, ধাতব কাটাযুক্ত লতার সমষ্টিযুক্ত চাবুক দিয়ে মারা হয়েছে। তারপর তার হাতের কব্জি এবং পায়ের পাতা একত্র করে ক্রুশের সাথে তাঁর মৃত্যু অবধি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এটা এক নিষ্ঠুর নির্যাতন ছিল।
যীশু জানতেন যে ক্রুশে মৃত্যুবরণ করার সময় এসে গেছে। তিনি তাঁর শিষ্যদেরকে অনেকবারই বলেছেন যে, তাঁকে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করবার জন্য এবং চাবুক মারবার ও ক্রুশে দেবার জন্য অযিহূদীদের হাতে দেওয়া হবে; পরে তৃতীয় দিনে তিনি মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠবেন।”৩
তিনি ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার আগে তাদের বলেছিলেন, ‘‘কেউ যদি তার বন্ধুদের জন্য নিজের প্রাণ দেয় তবে তার চেয়ে বেশী ভালবাসা আর কারও নেই।’’৪
যীশু আমাদের এটা দিতে চান,‘‘ পিতা যেমন আমাকে ভালবেসেছেন আমিও তেমনি তোমাদের ভালবেসেছি।’’৫ যীশু আমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসার প্রমাণ দিয়েছেন।
তিনি আমাদেরকে তাঁর সাথে জীবন পরিচালনা করতে বলেন।যাতে আমরা তাঁকে জানতে পারি এবং আমাদের প্রতি তাঁর ভালবাসা বুঝতে পারি। তিনি আমাদেরকে যেমন মানুষ হওয়ার জন্য তৈরী করেছেন সেইরকম মানুষ হয়ে যেন গড়ে উঠতে পারি। এটাই হল একজন ব্যক্তির জন্য সবচেয়ে মূল্যবান সম্পর্ক। এটা ব্যাখ্যা করে যে কীভাবে আপনি ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেন।
► | কিভাবে ঈশ্বরের সাথে একটা সম্পর্ক শুরু করেন |
► | আমার একটি প্রশ্ন বা মন্তব্য আছে… |
পাদটীকাসমূহ: (১) মথি ১১:২৮-২৯ (২) প্রকাশিত বাক্য ৩:২০ (৩) মথি ২০:১৮,১৯ (৪) যোহন ১৫:১৩ (৫) যোহন ১৫:৯