ঈশ্বর আমাদেরকে ভালবাসেন এবং তাঁর চরিত্র, চিন্তা, ও তাঁর হৃদয় প্রকাশ করার জন্য তিনি আমাদের পছন্দ করেছেন। এখানে ঈশ্বরের ৬টি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হল যা আমরা গণনা করতে পারি।
ঈশ্বর, যিনি এই মহাবিশ্বকে সুনির্দিষ্ট আকারে ও সৃজনশীলভাবে সৃষ্টি করেছেন, তিনি লুকায়িত নন। তিনি অনেক দুরে বা আলাদা থাকেন না বা বাইরে কোথাও নয়। বরং তিনি আমাদেরকে তাঁর সাথে সম্পর্ক তৈরীতে স্বাগতম জানিয়েছেন যেন আমরা তাঁকে একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মত ব্যক্তিগতভাবে জানতে পারি।
আমরা যে শুধুমাত্র তাঁকে জানতে পারি এমন নয় বরং আমরা তাঁকে ঘনিষ্ঠভাবে জানতে পারি।
“আমিই উত্তম মেষপালক। আমি আমার মেষগুলোকে জানি এবং তারাও আমাকে জানে...আমার মেষগুলো আমার ডাক শোনে। আমি তাদের জানি আর তারা আমার পিছনে পিছনে চলে। আমি তাদের অনন্ত জীবন দিই। তারা কখনও বিনষ্ট হবে না এবং কেউই আমার হাত থেকে তাদের কেড়ে নেবে না।”1
“জ্ঞানী লোকেরা তাদের জ্ঞানের গর্ব না করুক,
কিম্বা শক্তিশালীরা তাদের শক্তির গর্ব না করুক
কিম্বা ধনীরা তাদের ধনের গর্ব না করুক,
কিন্তু যে গর্ব করতে চায় সে এই নিয়ে গর্ব করুক যে:
সে আমাকে বোঝে ও জানে, অর্থাৎ সে জানে যে,
আমিই সদাপ্রভু,
আমার ভালবাসা অটল আর পৃথিবীতে আমার কাজ ন্যায়ে ও সততায় পূর্ণ,
আমি সদাপ্রভু এই কথা বলছি।2
ঈশ্বর চান যেন আমরা আমাদের বিষয়গুলো তাঁর কাছে নিয়ে আসি এবং তাঁর সাথে কথা বলি। একসাথে আসার জন্য আমাদেরকে আগে থেকে কিছু করতে হবে না। আমাদেরকে অমায়িক বা ভদ্র হতে হবে না আবার ধর্মতাত্ত্বিকভাবে সঠিক বা পবিত্রও হতে হবে না। এটি তাঁর বৈশিষ্ট্য যখন আমরা তাঁর কাছে যাই তখন তিনি ভালবাসার সাথে আমাদেরকে গ্রহণ করেন।
“যারা সদাপ্রভুকে ডাকে, অন্তর দিয়ে ডাকে,
তিনি তাদের কাছেই থাকেন।”3
“তোমরা যারা ক্লান্ত ও বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছ, তোমরা সবাই আমার কাছে এস; আমি তোমাদেরকে বিশ্রাম দিব।”4
আমরা যা কিছুই তৈরী করি তার অস্তিত্ব আগে থেকেই আছে বা যা পুর্বের চিন্তার উপর ভিত্তি করে তৈরী হয়। ঈশ্বর যে শুধুমাত্র গ্রহ নক্ষত্র ও জীবনের অস্তিত্বের উপরে কথা বলার জন্য সমর্থ তাই নয় বরং তিনি বর্তমানের সমস্যাগুলোর সমাধানের বিষয়েও সমর্থ আছেন। ঈশ্বর আমাদের জন্য সৃজনশীল। তাঁর শক্তি এমন একটি বিষয় যার জন্য তিনি চান যেন আমরা সেই বিষয়ে সচেতন থাকি এবং নির্ভর করি।
“আমাদের প্রভু মহান, তাঁর শক্তি প্রচুর;
তাঁর জ্ঞান-বুদ্ধির সীমা নেই।”5
“... কোথা থেকে আমার সাহায্য আসবে?
আমার সাহায্য সদাপ্রভুর কাছ থেকেই আসবে,
যিনি এই আকাশ ও পৃথিবীর নির্মানকর্তা।”6
আমরা পাপ করেছি। আমরা ঈশ্বরের পদ্ধতি বা পথে না চলে বরং নিজেদের পথে চলতে পছন্দ করি। এবং ঈশ্বর এটি দেখতে পান এবং তিনি তা জানেন। ঈশ্বর শুধুমাত্র এইসব গুনাহের দিকে লক্ষ্য করেন না কিন্তু সেই সাথে তিনি পাপের জন্য লোকদের দোষারোপ করেন ও বিচার করেন। যাইহোক, ঈশ্বর ক্ষমাশীল এবং যখনই তাঁর সাথে আমাদের সম্পর্ক শুরু হবে তখন থেকে তিনি আমাদের পাপ ক্ষমা করবেন। যীশু, ঈশ্বরের পুত্র যিনি ক্রুশের উপরে তাঁর জীবন দেয়ার মধ্যে দিয়ে আমাদের সমস্ত পাপের শাস্তি ভোগ করেছেন ও ক্ষমা করেছেন। তিনি মৃত্যু থেকে জীবিত হয়েছেন এবং আমাদেরকে ক্ষমার আহব্বান করেছেন।
যখন আমরা যীশু খ্রীষ্টের উপর বিশ্বাস করি তখন সেই বিশ্বাসের মধ্যে দিয়েই ঈশ্বর আমাদের নির্দোষ বলে গ্রহণ করেন এবং আমরা রক্ষাপ্রাপ্ত হই। এতে কিছু যায় আসে না যে আমরা কারা এবং আমরা কি করেছি... যখন আমরা যীশুর উপর বিশ্বাস করি তখন যীশু তাঁর রক্তের দ্বারা, অর্থাৎ তাঁর জীবন-উৎসর্গের দ্বারা আমাদের ঈশ্বরের দৃষ্টিতে নির্দোষ বলে ঘোষণা করেন।7
তিনি যা বলেন, আমরা তা বিশ্বাস করতে পারি। তিনি যা প্রতিজ্ঞা করেন তার উপর আমরা বিশ্বাস করতে পারি। ঈশ্বর যখন আমাদের ক্ষমা করা, অনন্তজীবন দেয়া ও তাঁর সাথে একটি সম্পর্কের প্রতিজ্ঞা করেছেন ..আমরা বিশ্বাস করতে পারি। ঈশ্বর সত্য কথা বলেন। যীশু অনেকবার এই কথা বলার মধ্যে দিয়ে তা জোড়ালো করতে চেয়েছেন, “সত্যিই আমি তোমাদেরকে বলছি...” ঈশ্বর তাঁর নিজের সম্পর্কে যা কিছু প্রকাশ করেছেন এবং কিভাবে এই পৃথিবীতে বাস করতে হবে সেই সম্পর্কে যে তথ্য দিয়েছেন তা নির্ভরযোগ্য। আমাদের আবেগ, চিন্তা ও সীমাবদ্ধ চেতনার চেয়ে তিনি যা বলেন তা আরো বেশি নিখুঁত ও সত্য। এর অর্থ এই যে আমাদের কাছে তিনি যত প্রতিজ্ঞা করেন তা বিশ্বাস করা যায় বা বিশ্বাসযোগ্য। আমরা তাঁর কথায় বিশ্বাস করতে পারি।
“তোমার বাক্য প্রকাশিত হলে তা আলো দান করে;
তা সরলমনা লোকদের বুঝবার শক্তি দেয়।
তোমার বাক্য আমার চরণের প্রদীপ
আমার পথের আলো।8
“ঈশ্বরের পথে কোন খুঁত নেই; সদাপ্রভুর বাক্য খাঁটি বলে প্রমানিত হয়েছে। তিনিই তাঁর মধ্যে আশ্রয় গ্রহণকারী সকলের ঢাল।”9
কিভাবে আপনি সবকিছুতে ১০০% সঠিক হতে পারবেন? ঈশ্বর সবকিছুতে ১০০% সঠিক। তাঁর জ্ঞান সীমাহীন। তিনি সমস্ত পরিস্থিতির সমস্তকিছু বুঝতে পারেন, এমনকি তিনি এর সাথে যুক্ত আগের ইতিহাস ও ভবিষ্যতের ফলাফলও জানেন। ঠিক কাজ করার জন্য আমাদেরকে তাঁকে আধুনিক করা, তাঁকে পরামর্শ দেয়া বা তাঁকে বলতে হয় না। তিনি নিজেই তা করেন কারণ তিনি তা করতে সক্ষম এবং তাঁর মনোভাব সম্পূর্ণ নিখুঁত। আমরা যদি তাঁকে বিশ্বাস করি, তিনি কখনই ভুল করবেন না, কখনই আমাদের ত্যাগ করবেন না বা প্রতারিত করবেন না। সমস্ত পরিস্থিতিতে, সব সময়ে ও সবকিছুতে তাঁকে সম্পূর্ণরুপে বিশ্বাস করা যায়।
“সদাপ্রভুই আমার আলো ও আমার উদ্ধারকর্তা, আমি কাকে ভয় করব? সদাপ্রভুই আমার জীবনের দূর্গ, আমি কাকে দেখে ভয়ে কাঁপব?”10
“যে তোমার উপরে আশা রাখে
সে লজ্জায় পড়বে না...”11
ঈশ্বর কে তার জন্য তিনি এগুলোই আমাদের বলেছেন। নিচের বিষয়টি ব্যাখ্যা করে যে কিভাবে আপনি এখনই তাঁর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেন: ঈশ্বরকে ব্যক্তিগতভাবে জানা।
► | কিভাবে ঈশ্বরের সাথে একটা সম্পর্ক শুরু করেন |
► | আমার একটি প্রশ্ন বা মন্তব্য আছে… |
পাদটিকা: (১) যোহন ১০: ১৪,২৭,২৮ (২) যিরমিয় ৯:২৩,২৪ (৩) গীতসংহিতা ১৪৫:১৮ (৪) মথি ১১:২৮ (৫) গীতসংহিতা ১৪৭:৫ (৬) গীতসংহিতা ১২১:১,২ (৭) রোমীয় ৩:২২,২৫ (৮) গীতসংহিতা ১১৯:১৩০,১০৫ (৯) ২ শমূয়েল ২২:৩১ (১০) গীতসংহিতা ২৭:১ (১১) গীতসংহিতা ২৫:৩