×
অনুসন্ধান
EveryBengaliStudent.com
জীবন এবং ঈশ্বর বিষয়ক প্রশ্নগুলি
 আবিস্কার করার জন্য নিরাপদ স্থান
ঈশ্বরের অস্তিত্ব

বিজ্ঞানীরা প্রকৃতির স্বভাবে হতবুদ্ধি হলেন

প্রকৃতির নিয়ম কেন এতটা চলমান? পদার্থবিজ্ঞানের নীতি অনুযায়ী কেন বিজ্ঞানীরা হতবুদ্ধি হলেন তা দেখুন।

WhatsApp Share Facebook Share Twitter Share Share by Email More PDF

প্রকৃতির নিয়মগুলো শুধুমাত্র আমাদের পৃথিবীর জন্যই নয়। আমাদের গোটা মহাবিশ্বে একই নিয়ম কাজ করে। আর এই নিয়মগুলো কখনই পরিবর্তিত হয় না।

আপনি যখন কোন কাউন্টারে কফি রেখে যান, তখন এটা সবসময়ই ঠান্ডা হয়ে যায়। মাধ্যাকর্ষণ সবসময়ই স্থির থাকে, এটি কখনও ওঠানামা করে না। আলোর গতি সবসময় চলামান থাকে। পৃথিবী ২৪ ঘন্টাই ঘুরতে থাকে। (এটা এতটাই নির্ভুল যে, আমরা জানি এটাকে চলমান রাখার জন্য প্রতি বছরই আমাদের বিশ্ব ঘড়ির সাথে অধি-সেকেন্ড যুক্ত করতে হবে।)

আমাদের মহাবিশ্ব এতটা সুশৃঙ্খলতা কিছুটা অদ্ভুত দেখায় না? কেন এমন হয়েছে?

মহাবিশ্বতত্ত্ববিদ শন ক্যারল এই বিষয়ে বলেছেন, ‘‘পদার্থবিজ্ঞানের নিয়ম হল একটি ছকের মত যেটা প্রকৃতি কোন ব্যতিক্রম ছাড়াই মান্য করে চলে।’’

বর্তমানে বিজ্ঞানীরা এই বিষয়টি মেনে নিয়েছেন যে মহাবিশ্ব নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে চলে। বিজ্ঞানের সকল কিছু লেখক জেমস ট্রাফিলের মহাবিশ্বতত্ত্বের নীতিটির উপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠিত: ‘‘এটা বলছে যে আমরা আমাদের গবেষণাগারে বর্তমানে প্রকৃতির যে নিয়মগুলো আবিষ্কার করছি তা মহাবিশ্বের সব জায়গাতেই সত্য এবং সর্বদাই এদের গতিশীলতা রয়েছে।’’

এখানে আরও তথ্য আছে। যেহেতূ বিজ্ঞানীরা যা পর্যবেক্ষণ করে সেটাই সংরক্ষণ করে রাখে, বেশিরভাগ সময়ই তারা শুধুমাত্র শব্দ এবং অনুচ্ছেদের ব্যবহার করেন না। প্রকৃতির নিয়মগুলো সংখ্যার মাধ্যমে নথিভুক্ত করা যায়। এগুলোকে গণিতের ভাষায় পরিমাপ এবং গণনা করা যায়।

শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীরা এগুলোর বিষ্ময়কর বিষয়গুলো দেখে আটকে গেছেন। মহাবিশ্বের নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলার কোন যৌক্তিকতা নেই, তাহলে এর নিয়মগুলো গণিতের দ্বারা পরিমাপ করাটা তো অনেক দূরের বিষয়। আলোর গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ১৮৬,০০০ মাইল, এটা কোন শিশুর হাতে ধরা কোন টর্চের আলো হোক বা হাজার হাজার দূরে অবস্থিত কোন ছায়াপথের তারার আলোই হোক, এর গতিবেগ একই হবে। গাণিতিকভাবে, আলোর একটি নির্দিষ্ট গতিসীমা আছে যেটা অপরিবর্তনশীল।

পদার্থবিদ ইউজিন উইগনার স্বীকার করেছেন যে প্রকৃতির গণিতিক সমর্থনযোগ্য বিষয়টি হল ‘‘রহস্যময়তার সাথে সীমাবদ্ধ এমন একটি বিষয় এবং এর স্বপক্ষে কোন যৌক্তিক ব্যাখ্যা নেই।’’ কোয়ান্টাম বৈদ্যুতিনবিদ্যার জন্য নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী রিচার্ড ফেইম্যান বলেছেন, ‘‘প্রকৃতি কেন গাণিতিক সেটা হল একটি রহস্য... এখানে বিষয়টি হল নিয়মগুলো যেটা আসলে কিছুটা অলৌকিক ধরনের।’’

এই আশ্চর্যজনক বিষয়টি থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে মহাবিশ্বের এরকম আচরণের কোন বাধ্যবাধতকতা নেই। এমন একটি মহাবিশ্ব কল্পনা করা সহজ, যেখানে পরিস্থিতিগুলি তাৎক্ষণিকভাবে অপ্রত্যাশিতভাবে পরিবর্তীত হয়, অথবা এমন একটি মহাবিশ্ব যেখানে বিষয়গুলো হঠাৎ করেই আসে এবং হঠাৎ করেই এর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যায়। এর পরিবর্তে, পরিবর্তে, বিজ্ঞানীরা মহাজগতের মৌলিক যৌক্তিকতায় দীর্ঘকালীন বিশ্বাসের সাথে আঁকড়ে থাকেন।

পদর্থবিদ পল সি. ডিভিস মন্তব্য করেছেন,‘‘... একজন বিজ্ঞানী হতে গেলে, আপনার এটা বিশ্বাস করতে হবে যে, এই মহাবিশ্ব নির্ভরযোগ্য, অপরিবর্তনীয়, সর্বজনীন, অজানা উৎসের কোন আইনের দ্বারা পরিচালিত। আপনার এটা বিশ্বাস করতেই হবে যে এই নিয়মগুলো কখনই ভাঙ্গবে না যে পরের দিন ঘুম থেকে উঠে যদি আপনি ঠান্ডা কিছু থেকে গরম কিছু বের হতে দেখেন বা আলোর গতিবেগ ঘন্টায় পরিবর্তিত হতে দেখেন তবুও এই নিয়মগুলো অপরিবর্তিত থাকবে। বছরের পর বছর আমি প্রায়ই আমার পদার্থবিদ সহকর্মীদের জিজ্ঞেস করেছি যে কেন পদার্থবিজ্ঞানের নিয়মগুলো যেমন আছে তেমনই থাকে?... এর মধ্যে সবচেয়ে পছন্দের উত্তরটি ছিল,‘‘ এই নিয়মগুলোর অপরিবর্তনশীলতার কোন কারণই নেই—এগুলো যেমন আছে তেমনই।’’

এমনকি সময়ের সাথে সাথে, এই আইনগুলো অটল থাকে। আমরা পৃথিবীতেও প্রকৃতির এই একই নিয়ম খুঁজে পাই। আধুনিক বিজ্ঞানীদের প্রধান একটি অংশ যারা এই আইনগুলোর অনুসন্ধান এবং আবিষ্কারকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, তারা ছিলেন পুরুষ এবং মহিলা যারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করেছিল। কেন? তারা বিশ্বজগতের নিয়মগুলোকে এমনভাবে কল্পনা করেছে যেখানে সেগুলো সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের দেওয়া নিয়মের যৌক্তিকতা এবং মর্যাদার জন্য অনুসরণ করছে। ঈশ্বর যেমনভাবে অটল, অপরিবর্তনশীল, বিজ্ঞানের প্রকৃতিও তেমনিভাবে চলমান। তারা বিশ্বাস করেছিল যে ঈশ্বর এই মহাবিশ্ব নির্দিষ্ট নিয়মের মাধ্যমে পরিচালিত করার জন্য যুক্তিসঙ্গত এবং চমৎকার সৌন্দর্যে তৈরী করেছিলেন।

যারা একাধিক ঈশ্বরে বিশ্বাসী তাদের ক্ষেত্রে এটা একেবারেই আলাদা, যারা প্রত্যেকে তাদের নিজস্ব খেয়াল-খুশি মত বা মেজাজের দ্বারা মহাবিশ্বের প্রতি প্রভাব বিস্তার করে। বহু ঈশ্বরবাদী সমাজগুলোতে, দেবতারা সঙ্গতিহীন এবং তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না এবং তাদের প্রকৃতি এমন দেবতাদের দ্বারা হয়েছে যাদেরকে কখনও জানা যায় নি। মহাবিশ্বের বৈশিষ্ট্য দেখে, তারা মনে করল যে তাদের অন্যন্য দেবতাদের মধ্যে একটি রহস্য আছে, সামান্য এক চিন্তা যে এটা অন্য ধরনেরও হতে পারে। আবিষ্কারযোগ্য, বুদ্ধিমান, সুশৃ্ঙ্খল মহাবিশ্বের ধারণাটি যে যুক্তিসঙ্গত এবং অনুমানযোগ্য সেটা সাধারণভাবে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল না।

অন্যদিকে, যীশুর অনুসারীরা, বিশ্বাস করতেন ঈশ্বর যৌক্তিক, বিজ্ঞ, স্বেচ্ছায় নিজেকে প্রকাশ করতে চান, যীশুকে দেখা মানেই তাঁকে দেখা। পুরো বাইবেলজুড়ে এই ধরণের বিবৃতি রয়েছে:

‘‘ঈশ্বর সম্বন্ধে যা জানা যেতে পারে তা মানুষের কাছে স্পষ্ট, কারণ ঈশ্বর নিজেই তাদের কাছে তা প্রকাশ করেছেন। ঈশ্বরের যে সব গুণ চোখে দেখতে পাওয়া যায় না, অর্থাৎ তাঁর চিরস্থায়ী ক্ষমতা ও তাঁর ঈশ্বরীয় স্বভাব সৃষ্টির আরম্ভ থেকেই পরিষ্কার হয়ে ফুটে উঠেছে। তাঁর সৃষ্টি থেকেই মানুষ তা বেশ বুঝতে পারে। এর পরে মানুষের আর কোন অজুহাত নেই‘’

আধুনিক বিজ্ঞানের সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি যেসব ব্যক্তিদের কাছ থেকে এসেছিল যারা প্রভু সম্পর্কে শাস্ত্র যা বলে সেটা বিশ্বাস করেছিল, যে…

‘‘সব কিছু তাঁর দ্বারা সৃষ্ট হয়েছে। তিনিই সব কিছুর আগে ছিলেন এবং তাঁরই মধ্য দিয়ে সব কিছু টিকে আছে।’’

তারা বিশ্বাস করতেন যে ঈশ্বর সব কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং মানবজাতির আবিষ্কার এবং উপকারের জন্য, এবং তাঁর গৌরবের জন্য তিনি পরাক্রমের সাথে যেসকল কাজগুলো করেছেন সেগুলো পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আমরা যাতে তাঁর ক্ষমতা এবং মহিমা বুঝতে পারি সেজন্যই তিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন। ‘‘নিউটন এবং তার সমসাময়িক বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করতেন যে বিজ্ঞানের চর্চা করার মাধ্যমে তারা মহাবিশ্বের অন্তর্নিহিত গাণিতিক তালিকাগুলোর মাধ্যমে এর সৃষ্টির পেছনের মহাপরিকল্পনা আবরণ সরান।’’

যেসকল বিজ্ঞানী তাদের বিশ্বাস নিয়ে কাজ করতেন তারা হলেন: কোপার্নিকাস, কেপলার, গ্যালিলিও, ব্রাহে, ডেসকার্টস, বয়েল, নিউটন, লাইবনিজ, গাসেন্দি, পাস্কাল, মের্সেন, কুভিয়ার, হার্ভে, ডালটন, ফ্যারাডে, হার্শেল, জোল, লেয়েল, লাভোসিয়েয়ার, প্রিস্টলে, কেলভিন, ওম্প, বার্তে স্টেইন ম্যাক্সওয়েল, প্ল্যাঙ্ক, মেন্ডেল।

এইসকল বিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছিলেন যে ঈশ্বর বিস্তীর্ণ একটি মহাবিশ্ব তৈরী করেছেন যেটা গাণিতিকভাবে পরিমাপযোগ্য, যা যথাযথ এবং মূল্যবান আবিষ্কারের দিকে নিয়ে যায়। এটা কেপলারের তৃতীয় সূত্র আবিষ্কারের মত আবিষ্কারগুলোকে উদ্ঘাটন করতে সাহায্য করেছে যেটা হল একটি গ্রহের কক্ষীয় পর্যায়কালের বর্গ তার কক্ষপথের পরাক্ষের ঘনফলের সমানুপাতিক মানে হল সূর্যের দূরত্বের সমানুপাতিক। এটাকে কেউ কিভাবে বের করতে পারে? কেপলার পেরেছিলেন, বিশাল এক অংশে কারণ তিনি বুঝতে পারতেন যে যা কিছু লুকায়িত আছে এবং আবিষ্কারের সম্ভাবনা রয়েছে সেটার একটি সুন্দর গাণিতিক সম্পর্ক রয়েছে—যেটা আপনার চেয়ে আরও অনেক বেশি জ্ঞানী ঈশ্বরের দ্বারা সুশৃঙ্খলভাবে সেখানে দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে, এমনকি সবচেয়ে ধর্মনিরপেক্ষ বিজ্ঞানীরাও ধারণা করেন যে প্রকৃতি শুধুমাত্র শৃঙ্খলা নয় বরং সরলতা এবং সৌন্দর্য্যকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে।

বৈজ্ঞানিক সাধনার পেছনে এই প্রশ্নটি যুক্তিসম্মত যে... এই মহাবিশ্ব কেন এত সুশৃঙ্খলবদ্ধ? অনেক পদার্থবিদ. মহাকাশতত্ত্ববিদ, এবং জীববিজ্ঞানীরা যারা আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেছেন তারা একটি স্পষ্ট উত্তর দিয়েছেন: সকল সৃষ্টির একজন সৃষ্টিকর্তা আছেন যিনি যুক্তিযুক্ত, প্রেমময় ঈশ্বর যিনি নিজেকে প্রতিনিয়তই মানবজাতির কাছে প্রকাশ করেন এবং তার নিজের ক্ষমতার দ্বারা মহাবিশ্বকে ধরে রাখেন।১০

ঈশ্বরের আস্তিত্বের আরও প্রমাণের জন্য, দয়া করে এটা দেখুন ‘‘ঈশ্বর কি সত্যিই আছেন?’’

 কিভাবে ঈশ্বরের সাথে একটা সম্পর্ক শুরু করেন
 আমার একটি প্রশ্ন বা মন্তব্য আছে…

পাদটীকাসমূহ: (১) শন ক্যারল, যিনি ক্যালিফর্নিয়া প্রযুক্তি ইনস্টিটিউডের একজন মহাবিশ্বতত্ত্ববিদ, উদ্ধৃত হয়েছে দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমসে, nytimes.com; ২০০৭। (২) জেমস্ ট্রেফিল, রিডিং দ্যা মাইন্ড অফ গড (নিউ ইয়র্ক: অ্যাঙ্কর বই, ১৯৮৯), ১। (৩) ইউজিন উইগনার, ‘‘দ্যা আনরিজনেবল ইফেক্টিভনেস অফ ম্যাথমেটিকস ইন দ্যা ন্যাচারাল সাইন্সেস,’’ ডগলাস ক্যাম্পবেল এবং হিগিন্স, এডস, ম্যাথমেটিকস (বেলমন্ট, সিএ: ওয়ার্ডসওয়ার্থ, ১৯৮৪, সংস্করণ. ৩.১১৭ (৪) রিচার্ড ফেইনম্যান, দ্যা মিনিং অফ ইট অল: থটস অফ এ সিটিজেন-সাইনন্টিস্ট (নিউ ইয়র্ক: বেসিকবুকস, ১৯৯৮),৪৩. (৫) পল সি. ডেভিস, আরিজোনা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন পদার্থবিজ্ঞানী, মহাবিশ্বতত্ত্ববিদ, জ্যোতির্জীববিজ্ঞানী, উদ্ধৃত হয়েছে edge.org/3rd_culture/davies07/davies07_index.html (৬) ড. এমিলি বাল্ডউইন; ‘‘আর্থস লওস স্টিল এপ্লাই ইন ডিসটেন্ট ইউনিভার্স’’; AstronomyNow.com; জুন, ২০০৮ (৭) রোমীয় ১:১৯,২০ (৮) কলসীয় ১:১৬,১৭ (৯) পল সি. ডেভিস, উদ্ধৃত হয়েছে edge.org/discourse/science_faith.html (১০) ইব্রীয় ১:১-৩; কলসীয় ১:১৬-১৯; যোহন ১:১-৫; যিশাইয় ৪০-৬৬


এই প্রবন্ধটি শেয়ার করুন
WhatsApp Share Facebook Share Twitter Share Share by Email More